E-3 Sentry (ই-৩ সেন্ট্রি) হলো আমেরিকার বোয়িং কোম্পানির তৈরি বায়ুবাহিত সতর্কীকরণ এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা (AWACS) বা, Airborne Warning and Control System এয়ারক্রাফট।
এই এয়ারক্রাফটে রাডার APY-2 ডপলার রাডার সিস্টেম ব্যবহার করা হয় তবে APY-1 ও ব্যবহার করা হয়।
AWACS এয়ারক্রাফট মূলত ব্যবহার করা হয় সমুদ্রপৃষ্ঠ এবং নিম্ন উচ্চতায় উড়ন্ত লক্ষ্যগুলির উপর নজর রাখা এবং সেগুলো ট্র্যাক করার জন্য।
একটি APY-2 রাডার ৫২০-৬৫০ কি.মি. এর ভিতরে উড়ন্ত বা পানির নিচে থাকা যে কোনো লক্ষবস্তুর উপরে নজর রাখতে এবং তা ট্র্যাক করতে পারে। ছোট টার্গেটের বেলায় এর রেঞ্জ ৪০০ কি.মি.। সবচাইতে বড় ব্যাপার হলো এই রাডার একসাথে নিজ টার্গেট ডিটেকশন ছাড়াও রেঞ্জের ভিতরে সর্বমোট ৬০০ টি টার্গেটের উপর নজর রাখতে এবং তা ট্র্যাক করতে পারে। আর এই রাডার ৩৬০ ডিগ্রি পুরো কভারেজ দেয়।
E-3 Sentry যুগোস্লাভিয়া ও ইরাকে সামরিক অভিযানের সময় সফলভাবে কাজ করে। ১১ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী হামলার পর ন্যাটো E-3 গুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মিশন চালানোর জন্য নিয়োজিত করে।
ই-৩ সেন্ট্রি Northrop Grumman এর ইলেক্ট্রনিক সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত রাডার সিস্টেম। যদিও এর ম্যানুফেকচার করে বোয়িং কোম্পানি। APY-1 থেকে APY-2 তে ডপলার রাডার সিস্টেমটি আপগ্রেড করা হয়েছে যাতে ক্রুজ মিসাইলের মতো ছোট টার্গেটগুলি সনাক্ত ও ট্র্যাক করতে পারে।
আপগ্রেড করে এতে উন্নতর কাউন্টার ইলেকট্রনিক জ্যামিং রাডার এ উন্নত করা যায়। APY-2 রাডার সিস্টেম APY-1 এর তুলনায় দক্ষ এবং নির্ভরযোগ্য। এছাড়াও রাডারের এন্টেনা, রিসিভার এবং ট্রান্সমিটার আপগ্রেড করা যায়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই AWACS ব্যবহার করে শত্রু সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে। যেমন বিমান, ক্রুজ মিসাইল এবং অন্যান্য হুমকি সম্পর্কিত তথ্য। 767 AWACS নামে পরিচিত AWACS গুলি 707-320 এর পরিবর্তে বোয়িং 767-200 এয়ারফ্রেম ব্যবহার করে নির্মিত হয়েছিল।
১৯৭৭ সালে সার্ভিসে আসা E-3 কে আপগ্রেড করার দরকার ছিল। যার ফলে ১৯৯৭ সালে ন্যাটো E-3 Sentry কে ১.৩ বিলিয়ন মিড-টার্ম আধুনিকীকরণ প্রোগ্রামের আওতায় আনে। যার লক্ষ্য ছিল তারা একটি দূরের অবস্থানরত টার্গেট থেকে সফটওয়্যারের মিশন অর্ডার এবং উপগ্রহ ডেটা লিংকগুলির মাধ্যমে আপডেট পাওয়া।
আধুনিকীকরণের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল বিমানবন্দর/অফবোর্ড সেন্সর দ্বারা যুদ্ধক্ষেত্রের হাই-রেজুলেশনের ছবি পাওয়া।
এবং এই প্রোগ্রামে ডেভলেপ করা ন্যাটো E-3 এডব্লিউএসিএক্স বিমানটি অক্টোবরে ২০০৪ সালে উৎপাদন এবং ডিজাইনের সাত বছর পরে যাত্রা শুরু করে। পরীক্ষাটি ২০০৫ সালে সম্পন্ন করা হয় এবং ২০০৮ সালে ন্যাটো পুরো রিটারফিট সম্পন্ন করে। এই E-3 (AWACS) এর প্রতি ইউনিটের এর মূল্য ৩০০ মিলিয়ন।
E-3 তে সর্বমোট ২৩ জন ক্রু বহন করা যায়। আর এই বিমানের সার্ভিস সিলিং ১০,৭০০ মিটার (৩১,১০৫ ফুট) এবং রেঞ্জ ৯,২৬০ কি.মি। বিমানটিতে আছে Pratt and Whitney এর ৪ টি TF33-PW-100A টার্বোফ্যান ইঞ্জিন। আর এই বিমানটি সর্বোচ্চ ১৫৭ টন ওজন নিয়ে টেকঅফ করতে পারে
আমেরিকার বাইরে E-3 Sentry এয়ারক্রাফটটি যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স আর সৌদিআরব ব্যবহার করে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.