ইরাক-ইরান যুদ্ধের পর ইরান নতুন করে পারমাণবিক কর্মসূচী শুরু করে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের কপালে চিন্তার ভাঁজ পরে। এই ভাজ মিলিয়ে দিতে এই ভাঁজ মিলিয়ে দিতে সিআইএ হাজির হলো তাদের এক ‘অভূতপূর্ব’ পরিকল্পনা অপারেশন মারলিন নিয়ে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, আমেরিকাতে অবস্থান করছে এমন একজন রাশিয়ান নিউক্লিয়ার বিজ্ঞানীকে নিয়োগ করা হবে ইরানের সাথে যোগাযোগের জন্য। এই বিজ্ঞানীর কাজ হবে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্লুপ্রিন্ট সরবরাহ করা। সেই ব্লুপ্রিন্ট দেবে আমেরিকা, যা কিনা ইচ্ছাকৃতভাবে ভুলে ভরপুর থাকবে!
তো ১৯৯৭ থেকে শুরু হলো অপারেশনের কাজ। একজন সাবেক রাশিয়ান পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানীকে নিয়োগ করা হলো মাসিক ৫ হাজার ডলার বেতনে, যা পরে বেড়ে ৬ হাজার হয়েছিল। এই রাশিয়ান বিজ্ঞানীর দ্বারাই ২০০০ সালের ৩ মার্চ টিবিএ-৪৮০ ফায়ার সেট মডেলের পারমাণবিক অস্ত্রের ব্লুপ্রিন্ট ইরানি পরমাণুবিজ্ঞানীদের সরবরাহ করে সিআইএ।
মজার ব্যাপার হলো, রাশিয়ান বিজ্ঞানীও জানতো না যে এই ব্লুপ্রিন্টে রয়েছে সিআইএ’র ‘মোডিফিকেশন’। বরঞ্চ সিআইএ’র পক্ষ থেকে এই মডেলকে, তখনকার সময়ের চেয়ে অন্তত ২০ বছর অগ্রসর বলে দাবি করা হয়!
তবে সিআইয়ের দাবী মিথ্যা ছিল না তাঁদের সংগ্রহ করা টিবিএ-৪৮০ ফায়ার সেট আসলেই অনেক অগ্রসর প্রযুক্তি কিন্ত এতে কিছু ইচ্ছাকৃত ভুল ছিল যাতে পারমাণবিক প্রজেক্ট তৈরি হবার পরে সেই ভুলে কোন ভয়ানক দুর্ঘটনা ঘটে যায়।
সিআইএ’র জন্য নিছক পরিতাপের বিষয় যে, অভিজ্ঞ রাশিয়ান সেই পরমাণু বিজ্ঞানী ‘২০ বছর অগ্রসর’ মডেলে কিছু মারাত্মক ভুল ধরে ফেলেন যা সিআইএ ইচ্ছা করেই দিয়েছিল এবং সেই রাশিয়ান বিজ্ঞানী ইরানিদের অবহিত করেন সেই ভুল সম্পর্কে তখন সিআইএ’র নিকট নিজেদের পরিকল্পনাই কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো হয়।
কারণ ২০ বছরের অগ্রসর দাবি করার জন্য তারা প্রকৃতপক্ষেই অনেক উন্নত ডিজাইনই পাঠিয়েছিল, যার মধ্যে সূক্ষ্মভাবে কিছু ভুল ঢুকিয়ে দেয়া হয়। ফলে ইরানি বিজ্ঞানীদের জন্য এই ভুলগুলো জেনে যাবার পর, সঠিক অংশগুলো কাজে লাগানো আরো সহজ হয়ে যায়!
এবং ইরান ও তাই করে ডিজাইনের সঠিক অংশগুলি কাজে লাগিয়ে তারা অনেক কম খরচে উন্নত পারমাণবিক প্রযুক্তি হাতে পায়। বলতে গেলে ইরানের পারমাণবিক প্রযুক্তি আমেরিকা থেকেই এসেছে যা অনেক উন্নত।
সোর্স- রোয়ার বাংলা ও নিজে সংযোজিত
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.