ইউরোপে যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয়েছিলো তখনই ইউরোপের মূল তিনটি শক্তিশালী দেশ যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানী দুইটি মূল দলে বিভক্ত হয়ে যুদ্ধ শুরু করে৷তবে যুদ্ধের শুরুতে দুই বিশ্বপরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকলেও ঘটনাক্রমে এরাও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। যুদ্ধের সময় জার্মানীর পক্ষে যোগ দিয়ে যখন জাপান যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপে পার্ল হার্বারে হামলা করে তখন থেকেই বৃটেন এবং ফ্রান্সের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে যুদ্ধে প্রবেশ করে যুক্তরাষ্ট্র।
ইউরোপ এবং প্রশান্ত মহাসাগর দুই ফ্রন্টে লড়াই করলেও সেই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মূল শত্রু ছিলো জাপান৷ পার্ল হার্বারে হামলার পর যুদ্ধ শুরু হলে যুক্তরাষ্ট্র প্রথম যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেয় মিডওয়ের যুদ্ধে। এতে বিপুল পরিমান জাহাজ, যুদ্ধবিমান এবং সৈন্য হারানোর পর জাপান প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপের উপর দখলদারিত্ব ছেড়ে একপ্রকার কোনঠাসা হয়ে পড়ে৷ অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র তার ভারী শিল্পায়নের মাধ্যমে ইস্পাতের উৎপাদন ক্রমাগত বাড়িয়ে ট্যাংক, যুদ্ধবিমান, বোমারুবিমান এবং যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা বাড়িয়েই চলে।
বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির মূলভূখন্ডের ভিতরে ঢুকে ভারি আকারে বোমাবর্ষনে যুক্তরাষ্ট্রের B-17 Flying Fortress Heavy Bomber গুলোই ছিলো মূল ভরসা৷ তবে জাপানকে বধ করতে তা মোটেও যথেষ্ট ছিলো না৷ ভূখন্ড হতে বিচ্ছিন্ন এবং চতুর্দিকে সমুদ্র দ্বারা বেষ্টিত জাপানে বিমান হামলা করার মত ক্ষমতা যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ছিলো না৷ কেননা জাপানের নিকটবর্তী কোন দ্বীপ থেকে টেকঅফ করলেও বি-১৭ বোমারু বিমানের জাপানের কোন দ্বীপে পৌছানোর মত রেঞ্জ ছিলো না। তাছাড়া হালকা বোমারু বিমানের মধ্যে বি-২৫ ও বিমানবাহী রনতরী থেকে টেকঅফ না করলে সেখানে পৌছানোর মত ক্ষমতা রাখতো না পাশাপাশি বি-২৫ এর বিমান বহনের ক্ষমতা ছিলো খুবই নগন্য৷ তাই বি-২৯ প্রোগ্রামে টাকা ঢেলে তাকে দ্রুত সার্ভিসে আনার ব্যাবস্থা করা হয়।
বি-২৯ বিমান তৈরির প্রোগ্রাম দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মিলিটারি প্রোগ্রাম হিসেবে পরিচিত, যার ব্যয় ছিলো তৎকালীন ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বর্তমানে ৪৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমতুল্য৷ ঠিক তার পরের ব্যয়বহুল মিলিটারি প্রোগ্রামও ছিলো যুক্তরাষ্ট্রের এবং এর নাম ছিলো ‘প্রোজেক্ট ম্যানহ্যাটান’।
এটি ছিলো জাপানে হামলা করার জন্য দুটি পরমানু বোমা তৈরির প্রোগ্রাম৷ এই প্রোগ্রামের ব্যয় ছিলো তৎকালীন ১.৯ বিলিয়ন ডলার৷ নতুন বোমারু বিমান হিসাবে এর মধ্যে বেশ কয়েকটি নতুন বৈশিষ্ট্য যোগ করার ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছিলো যা পূর্বে কখনো পৃথিবী দেখেনি। এর মূল বৈশিষ্ট্য ছিলো এর বোমা বহনের ক্ষমতা, উড্ডয়নের উচ্চতা বা অল্টিটিউড, দূরপাল্লায় যেকোন স্থানে হামলা করার ক্ষমতা বা রেঞ্জ এবং উন্নত আর্মার প্লেটিং বা ভারী বর্ম যা যুদ্ধবিমানের কামান থেকে বোমারু বিমানটিকে নিরাপত্তা প্রদান করতো৷
এর পাশাপাশি আরো কিছু সুবিধা ছিলো যা এই বিমানকে বি-১৭ থেকে এক প্রজন্ম এগিয়ে রেখেছিলো এবং তা হলো এর আবহাওয়া নিয়ন্ত্রিত ককপিট বা Climate Controlled Cockpit যার ফলে অত্যাধিক উচ্চতা দিয়ে উড়ে গেলেও বিমানের পাইলটরা কোন প্রকার শীত অনুভব করতেন না৷ যেখানে বি-১৭ চালনাকালীন সময় উচ্চতার ফলে কনকনে শীতের জন্য পাইলটদের ভারী বস্ত্র পরতে হতো।
এর পাশাপাশি ছিলো বায়ুচাপ নিয়ন্ত্রিত কেবিন বা Pressurised Cabin যার ফলে পাইলট সহ বিমানের অন্যক্রুদের মিশন পরিচালনার সময় শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য কোন মাস্ক বা শ্বাস-প্রশ্বাসের যন্ত্র ব্যবহার করতে হতো না বিমানের অভ্যন্তরীন বায়ুচাপ নিয়ন্ত্রিত থাকার ফলে। তাই বিমানের ক্রু সকলেই দীর্ঘ এবং দূরপাল্লার মিশনে চাইলে চা-কফি খেয়ে নিজেদের তরতাজা রাখতে পারতেন৷
বি-২৯ এর অন্য একটি যুগান্তকারী সুবিধা ছিলো রিমোট কন্ট্রোলড টারেট৷ এর ফলে যারা বোমারু বিমানকে জাপানি যুদ্ধবিমান থেকে সুরক্ষা প্রদানের জন্য কামান চালাতেন তাদের বিমানের বিভিন্ন অংশে বন্দুকের কাছে না বসেই একটি সুরক্ষিত ক্যাবিনে বসে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত সিস্টেম দ্বারা ৬টি স্থানের ১২টি হেভিমেশিনগান একটি স্থানে বসেই চালাতে সক্ষম ছিলেন৷ বি-২৯ তার পূর্বসূরি থেকে বেশকিছু দিক দিয়ে ব্যাপক ব্যবধানে এগিয়ে ছিলো।
বি-১৭ যেখানে ৭৩ ফুট লম্বা এবং ১০৪ ফুট প্রশস্ত ডানার অধিকারী ছিলো সেখানে বি-২৯ ছিলো দৈর্ঘ্যে ৯৯ ফুট এবং ডানার প্রস্থ ছিলো প্রায় ১৪১ ফুট৷ বি-২৯ এর ইঞ্জিন ছিলো বি-১৭ থেকে প্রায় দ্বিগুন শক্তিশালী৷
বি-১৭ এর ১২০০ হর্সপাওয়ারের মোট চারটি ইঞ্জিনের বদলে বি-২৯ এর নতুন প্রযুক্তির ২২০০ হর্সপাওয়ারের ৪টি ইঞ্জিন ছিলো৷ ফলে অত্যাধিক ওজনের ভারী বোমা নিয়ে বি-২৯ বোমারু বিমান অনেক দূরে উড়ে গিয়ে হামলা করতে সক্ষম ছিলো৷ বি-২৯ এর সবচেয়ে লাভজনক বিষয়টি ছিলো। বি-২৯ এর রেঞ্জ ছিলো ৫৫০০ কি.মি, যেখানে বি-১৭ এর রেঞ্জ ছিলো ৩৩০০ কি.মি৷ ফলে বি-১৭ বিমানকে জাপানের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা না গেলেও বি-২৯ জাপানের ভূখন্ডের একেবারে গভীরে ঢুকে হামলা চালানোর মতো সামর্থ্যবান ছিলো৷
১৯৪২ সালের শেষার্ধে বি-২৯ মডেলের প্রথম বিমানটি নির্মাতা কোম্পানি বোয়িং যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করলে বড় সংখ্যায় বিমানটি তৈরির উদ্যোগ গ্রহন করা হয়। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের চারটি রাজ্য ওয়াশিংটন, ক্যানসাস, নেব্রাস্কা ও জর্জিয়াতে বোয়িং এর ফ্যাক্টরি খুলে বি-২৯ এর বিশাল আকারে প্রোডাকশন চালু করা হয়৷ তার পাশাপাশি বিভিন্ন সাবকন্ট্রাক্টরকেও বি-২৯ সুপার ফোট্রেস তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় যাতে জাপানের বিরুদ্ধে যতদ্রুত সম্ভব এই বিমানটি মোতায়েন করা যায়।
বি-২৯ বিমানের ক্রু সংখ্যা মোট ১১ জন৷ যাদের মধ্যে পাইলট, কো-পাইলট, নেভিগেটর, গানার, বোম্বারডিয়ার এবং ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার রয়েছেন৷ বিমানের একদম অগ্রভাগে বসেন বোম্বারডিয়ার, এরপর পাশাপাশি দুজন পাইলট এবং কো-পাইলট।
তার পেছনে বসেন নেভিগেটর যিনি মিশনে বিমানের পথপ্রদর্শন করেন৷ তার পেছনে বসেন রেডিওম্যান যিনি গ্রাউন্ড স্টেশনের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন৷ তার পেছনে বসেন ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার যিনি বিমানের রক্ষনাবেক্ষন করেন৷ পিছনের একটি কক্ষে গানার বসেন যারা মেশিনগান চালানোর দায়িত্বে থাকেন৷
বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন জাপানের বেশকিছু উপনিবেশ ছিলো চীনে যেখান থেকে জাপান যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় রসদ লুট করতো৷ তাই চীন থেকে জাপানের উপনিবেশ সরিয়ে দিলে সেখানে যুক্তরাষ্ট্র তাদের জন্য বোমারু বিমানের ঘাটি তৈরির চিন্তা করে যেখান থেকে উড়ে গিয়ে জাপানে বোমাবর্ষন করে পুনরায় ফিরে আসা যায়৷
কাজেই ১৯৪৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র চীনে চেংডুতে নিজেদের বিমানের জন্য Forward Operating Airbase তৈরির কাজ করে। জাপানের হামলা থেকে বাচানোর জন্য বি-২৯ এর স্থায়ী ঘাটি রাখা হয় ভারতে যার একটি ছিলো কোলকাতায়৷ ভারতে এরকম ৫টি স্থায়ী বিমানঘাটি তৈরি করা হয় যেখানে বিমানের টেকঅফ এবং ল্যান্ডিংএর জন্য প্রতিটি ঘাটিতে ৮,৫০০ ফুট লম্বা এয়ারস্ট্রিপ বা রানওয়ে তৈরির কাজ ঢালাওভাবে শুরু করা হয়।
তার পাশাপাশি এমিউনেশন স্টোরেজ, হাসপাতাল, অফিস সহ বেশকিছু স্থাপনাও তৈরি করা হয় পাইলটদের সুবিধা প্রদানের জন্য৷ এর পাশাপাশি চীনে বিপুল পরিমান জ্বালানীর মজুদ রাখা হয়৷ ফলে স্থায়ী বিমানঘাটি থেকে উড়ে এসে ফরওয়ার্ড এয়ারবেজে জ্বালানী ভরে বিমানগুলো জাপানে বোমা ফেলার উদ্দেশ্যে সহজেই রওনা দিতো৷ বি-২৯ এর মিশনগুলো ছিলো বেশ দীর্ঘসময়ের যা প্রায় ১৪-১৬ ঘন্টা স্থায়ী হতো৷ এমনকি জাপানের হনশু দ্বীপে আক্রমনের জন্য ২৩ ঘন্টা দীর্ঘ মিশন পরিচালনারও রেকর্ড আছে৷
১৯৪৩ সালে মারিয়ানা ট্রেঞ্চের নিকট ফিলিপাইন সাগরে জাপানি নৌবাহিনীর সাথে যুদ্ধে জয়ী হয়ে ফিলিপাইন সাগরের তিনটি দ্বীপের দখল নেয় যুক্তরাষ্ট্র৷ তার মধ্যে ছিলো গুয়াম, তিনিয়ান এবং সাইপান৷ এই তিনটি দ্বীপে বোমারু বিমান রাখান জন্য মোট ৫টি বিমানঘাটি তৈরি করা হয়৷ এই পাঁচটি বিমানঘাটির প্রত্যেকটিতে ১৮০ টির কাছাকাছি বোমারু বিমান মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র। এই ঘাটিগুলো দখলের ফলে যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপক সুবিধা লাভ করে৷ কেননা চীনে রাখা ঘাটি থেকে জাপানের অনেক জায়গায় হামলা করলেও টোকিও নাগালের বাইরে ছিলো। তবে ফিলিপাইন সাগরের দ্বীপ থেকে সহজেই টোকিওতে হামলা করা যেতো৷ যার ফলে এই যুদ্ধে হারার পর জাপানের কপালে দূর্যোগ নেমে আসে৷
বি-২৯ এর হামলা বেশিরভাগই হতো দল বেধে। যেখানে ৫০-১০০ টি বোমারু বিমান একটি ফরমেশন বেধে জাপানের কোন স্থানের উপর দিয়ে উড়ে যেতো। হামলার টার্গেটে বেশিরভাগ সময় থাকতো জাপানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা যেমন সামরিক ঘাটি, শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক স্থান। বি-২৯ এর জাপানের উপর প্রথম মিশনের টার্গেট ছিলো জাপানের ফুকুওকা শহর৷ এই হামলায় অংশ নেয় ৪৭টি বিমান এবং টার্গেটের মূল লক্ষ্য বস্তু ছিলো লোহা এবং ইস্পাতের কারখানা৷ এখান থেকে আসা লোহা এবং ইস্পাত দিয়েই মূলত জাপানের সামরিক বাহিনীর ভারী অস্ত্রশস্ত্র বানানো হতো৷
এরপর থেকে চীনের ঘাটি ব্যবহার করে জাপানে বিভিন্ন সংঘবদ্ধ বোমা হামলা চালানো হয় যা নিচে দেওয়া হলোঃ
প্রথমে রয়েছে তারিখ এবং ডান পাশে ব্র্যাকেটে রয়েছে অংশ নেওয়া বোমারু বিমানের সংখ্যাঃ
◽07 July 1944 (14 B-29s)
◽29 July 1944 (70)
◽10 August 1944 (24)
◽20 August 1944 (61)
◽8 September 1944 (90)
◽26 September 1944 (83)
◽25 October 1944 (59)
◽12 November 1944 (29)
◽21 November 1944 (61)
◽19 December 1944 (36)
◽06 January 1945 (49)
চীনের ঘাটিতে সার্ভিস দেওয়ায় রসদের স্থানান্তরের জন্য বেশকিছু সমস্যা পোহাতে হয় হতো৷ তাই বেশকিছু বি-২৯ কে কার্গো বিমানে কনভার্ট করে জ্বালানী, বোমা সহ অন্যান্য রসদ ভারত থেকে চীনে নেওয়া হতো৷ বিমানগুলো এসব রসদ বহন করে হিমালয় পর্বতমালা পাড়ি দিয়ে ভারত থেকে চীনে থাকা ফরওয়ার্ড এয়ারবেজে রসদ পৌছে দিতো৷ ফিলিপাইন সাগর দখলের পর সেখানে বিমান মোতায়েন করলে জাপানের উপর ভারী আকারে বোমা হামলা চালু করা হয়৷
এই যুদ্ধে শুধু টোকিওতেই ৩ লক্ষ মানুষ মারা যায়, ২৫ শতাংশ বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যায় এবং ১০ লক্ষাধিক মানুষ ঘরছাড়া হয়ে যায়। যা জাপান সাম্রাজ্যের কোমর ভেঙ্গে দেয়৷ অস্ত্র উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়, অর্থনৈতিক অভাব শুরু হয় এবং শক্তিশালী মনোবলের জন্য পরিচিত জাপানের মনোবল যুদ্ধে পরাজয়ের মুখে ভেঙ্গে পড়তে শুরু করে৷
জাপানি সাম্রাজ্যকে দূর্বল করার পাশাপাশি তার কফিনে শেষ পেরেকটিও ঠুকে দিয়েছিলো বি-২৯ বোমারু বিমান। যুদ্ধের শেষদিকে “প্রজেক্ট ম্যানহ্যাটান” এর মাধ্যমে লিটল বয় এবং ফ্যাট ম্যান নামক দুটি পরমানু বোমা তৈরি করা হয়। এই বোমা দুটি বহনের জন্য দুটি বি-২৯ সুপার ফোর্ট্রেসকে বিশেষভাবে রুপান্তর করা হয়, যাদের নাম ছিলো Enola Gay এবং Bockscar ৷
এরা যথাক্রমে ৬ এবং ৯ আগস্ট জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে পরমানু বোমা ফেলে জাপানিজ সাম্রাজ্যের ভিত নাড়িয়ে দেয় যার ভয়াবহতা দেখে বিশ্বও কেপে ওঠে৷ কেননা ঐ সময়ই বিশ্ব প্রথম পরমানু বোমার সাথে পরিচিত হয়৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কোরিয়ান যুদ্ধেও দক্ষিন কোরিয়ার পক্ষ হয়ে যুক্তরাষ্ট্র এই বিমানকে ব্যবহার করে এবং ৫০ দশকের শেষ পর্যন্ত এই বিমানটি যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের বিমানবাহিনী কে সার্ভিস দিয়ে যায়।
বি-২৯ বোমারু বিমানের পাশাপাশি হেলক্যাট, মাস্টাং এবং করসায়ারের মত শক্তিশালী যুদ্ধবিমান তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্র৷ এসব যুদ্ধবিমান জাপানি বিমানবাহিনীর মূল যুদ্ধবিমান জিরোকে যুদ্ধে বিরাট ব্যাবধানে পরাজিত করে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রবাহিনী ৬ লক্ষ যুদ্ধবিমান অর্থাৎ প্রতি ৫ মিনিটে একটি বিমান তৈরি করে৷ যেখানে অক্ষশক্তি তৈরি করে মাত্র ২ লক্ষ৷ মজার ব্যাপার হচ্ছে মিত্রবাহিনীর মধ্যে আমেরিকা একাই ৩ লক্ষ বিমান তৈরি করেছিলো যা তাদের ভারী শিল্পের উৎপাদন সক্ষমতার অন্যতম উদাহরন।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.