সাবেক আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে ধরতে অনেক অপারেশন চালিয়েছে সিআইএ। সোভিয়েতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লাদেন ও অন্যান্য সহযোগীদের তৈরিতে যে সিআইএ‘র ভূমিকার কথা সবারই জানা। এক সময় নিজেদের সাহায্যে গড়ে তুলা এই আল কায়েদার নেতাদের ধরতে অনেক অভিযান চালায় সিআইএ। লাদেনকে ধরতে যে অভিযান চালানো হয় তাকে বলা হয় আমেরিকার এই গোয়েন্দাবাহিনীর ইতিহাসে অন্যতম নিকৃষ্ট ও জন্ম দিয়েছে বিতর্কের।

Osama Bin Laden

ছবিতে ওসামা বিন লাদেন

লাদেনকে ধরার নাম করে সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক যে কাজটি করেছিল সিআইএ, তা হচ্ছে নকল টিকাদান কর্মসূচী।

তারা পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদের আশেপাশের অঞ্চলে বিন লাদেনের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে, পোলিও টিকাদানের নাম করে হাজারো শিশুর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে। উদ্দেশ্য পরিষ্কার, এসব নমুনার কোনোটির সাথে যদি বিন লাদেনের ডিএনএ মিলে যায়, তাহলেই হলো!

এই হীন পরিকল্পনাকে বাস্তবতার মোড়কে ঢেকে দেয়া হয় এক বিদেশী এনজিও নামে আর সেখানে উচ্চবেতনে সব কিছু গোপন করার শর্তে পাকিস্তানি ডাক্তার শাকিল আফ্রিদিকে নিয়োগ করে।

Physician Shakil Afridi

ছবিতে ডাক্তার শাকিল আফ্রিদি

তবে, লাদেনের মৃত্যুর দুদিনের মাথায়ই সব জেনে যায় পাকিস্থানি গোয়েন্দাবাহিনী এবং গ্রেফতার হন শাকিল। তাকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত করে ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। সিআইএর এই অপারেশনের ফলাফল ছিল ভয়াবহ। পোলিও প্রবণ পাকিস্তানের ওই অঞ্চলে কয়েক বছর শিশুদের পোলিও টীকা না দেওয়ার ফলে হাজার হাজার শিশু পোলিওতে আক্রান্ত হয়।

এই ঘটনার পর থেকেই টিকাদান কর্মসূচী একরকম বন্ধ হয়ে যায়। মানুষ প্রকৃত টিকাদান কর্মসূচীকেও গোয়েন্দাদের ষড়যন্ত্র বলে ভাবতে শুরু করে!

ফলে সরকার বাধ্য হয়ে উক্ত এলাকায় পোলিও নিয়ন্ত্রণে ও শিশুদের বাধ্যতামূলক পোলিও টীকা শিশুদের দিতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে। এই ঘটনার পর বিদেশী এনজিওর কার্যকলাপ নতুন করে আলোচনায় আসে।

Facebook Comments

comments