আমরা বিভিন্ন সময় “ম্যাক” শব্দটা শুনে আসছি। কিন্তু সবাই হয়তো ম্যাক সম্পর্কে বিস্তারিত জানিনা। আর তাই আজ আমরা ম্যাক নিয়ে আলোচনা করবো।

আসলে ম্যাক হচ্ছে বিমানের গতির একক যা বিমানের ক্ষমতাও নির্দেশ করে।

আমরা যেমন মোটরের ক্ষমতার একককে হর্স পাওয়ার হিসেবে ধরি ঠিক তেমনিই বিমানের গতির একককে ম্যাক হিসেবে ধরা হয়।

১৯২৯ সালে সর্বপ্রথম সুইজারল্যান্ডের বিজ্ঞানী জ্যাকব এ্যাকেরেট বিখ্যাত অস্ট্রিয়ান পদার্থবিদ আর্নেস্ট ম্যাক, যিনি বায়ু প্রবাহের কাজের জন্য বিখ্যাত, তার নামানুসারে এই নামকরন করেন।

ম্যাক কি????

ম্যাক মানে হলো শব্দের সাথে বস্তুর গতিবেগের তুলনা।

ম্যাক ১ = শব্দের গতিবেগের সমান।
ম্যাক ২ = শব্দের গতিবেগের ২ গুন।
ম্যাক ৩ = শব্দের গতিবেগের ৩ গুন

কোনো বস্তুর বাতাসে বেগ এবং শব্দের বাতাসে বেগের অনুপাতকে ম্যাক নাম্বার বলা হয়।

বাতাসে শব্দের গতি ঘন্টায় ৭৪৬ মাইল। যে মাধ্যমে ঘনত্ব যত বেশি, তার মধ্য দিয়ে শব্দ তত দ্রুত যায়। উচ্চতার ভিন্নতার কারণে শব্দের গতিরও ভিন্নতা দেখা যায় কেননা উচ্চতা বাড়তে থাকলে বাতাসের ঘনত্বও কমতে থাকে। যখন কোনো উড়োজাহাজের গতি ঘন্টায় ৭৪৬ মাইল অতিক্রম করে তখন একটা সংঘাতময় তরঙ্গের সৃষ্টি হয় এবং শব্দের বাধা অতিক্রম করে। ম্যাক-২ এ উড়োজাহাজ প্রায় ঘন্টায় ১৪৯১ মাইল বেগে চলবে যা শব্দের গতির দ্বিগুণ।

ক্যাপ্টেন চাক ইয়েগার ছিলেন প্রথম ঐতিহাসিক বৈমানিক যিনি ১৯৪৭ সালের ১৪ অক্টোবর সর্বপ্রথম শব্দের বাধা ভাঙেন।

ম্যাক নাম্বার ১ এর চেয়ে কম হলে একে সাবসনিক বলা হয়। যদি ম্যাক নাম্বার ১ হয়, তবে এই গতিকে ট্রানসনিক বলা হয়। আর যদি ম্যাক নাম্বার ১ এর চেয়ে বেশি হয়, তখন এই গতিকে সুপারসনিক বলা হয় আবার যদি তা ম্যাক নাম্বার ৫ এর বেশি হয় তবে সেই গতিকে হাইপারসনিক বলা হয়।

অর্থাৎ, ম্যাক নাম্বার হচ্ছে = বস্তুর গতি/শব্দের গতি

আমাদের আশেপাশে বায়ুতে একটু সুনির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও চাপশক্তি রয়েছে আর এর ফলে শব্দে গতির তারতম্য লক্ষ্য করা যায়।

গ্রাউন্ড লেবেলে শব্দের গতির চেয়েও কম গতিতে যাওয়া কোন বিমানের গতি, বাতাসের মধ্যে দিয়ে শব্দের গতির সমান গতিতে যাওয়া কোন বিমানের থেকে বেশি।

ধরুন সমান স্পিডে যাওয়া দুইটা বিমানের একটা গ্রাউন্ডে এবং অন্যটা বাতাসে সেক্ষেত্রে দুইজনের স্পিডে তারতম্য ঘটবে।

ভিন্ন গতিতে যাওয়া দুটি বিমানের স্পিড ও সমান হতে পারে যদি উভয় ই ম্যাক ১ গতিতে ফ্লাই করে, সেক্ষেতে বায়ুর চাপ দুজনকেই সমানভাবে ট্রিট করবে।

ছবিতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর মিগ-২৯

ধরুন বাংলাদেশের মিগ-২৯ বিমানের গতি ম্যাক ১.৯। আর বাতাসে শব্দের গতি ৩৩৬ মিটার/সেকেন্ড, সেক্ষেত্রে ঘন্টায় এর গতি হবে ১.৯৩৩৬৬০*৬০=২২৯৮ কিলোমিটার।

তথ্যসুত্র:(ইন্টারনেট ও এডমিন কর্তৃক সংযোজিত)

Facebook Comments

comments