২০০৮ সালে বাংলাদেশের সমূদ্রের অভ্যন্তরে ওয়েল রিগ বসানো এবং খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মাঝে যুদ্ধাবস্থা শুরু হয়।

সমস্যা সমাধানের পরেও উভয় দেশ সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে শুরু করে। এক্ষেত্রে উভয়েই নৌবাহিনী কে গুরুত্ব দেয়। সেসময় বাংলাদেশ নৌবাহিনী একটা নখ দন্তহীন দুর্বল বাহিনী ছিল। তবুও সেসময় বার্মিজ যুদ্ধজাহাজের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে কুণ্ঠিত হয়নি।


আজ আমরা দেখবো বাংলাদেশ নৌবাহিনী বিগত দশ বছরে কতটা উন্নতি করেছে। নিচে ২০০৯ এবং ২০১৯ সালে নৌবাহিনীর অলংকার সমূহের তফাৎ উল্লেখ করা হলঃ


ফ্রিগেটঃ

২০০৯ সালে নেভীর কাছে মাত্র ১ টি ফ্রিগেট(Type53H1) ছিল। ২০১৯ সালে সংখ্যাটি দাড়িয়েছে ৬ টিতে। এর মাঝে মিসাইল ফ্রিগেট ৪ টি (১ টি বঙ্গবন্ধু ক্লাস, ১ টি Type53H1, ২ টি Type53H2 এবং পেট্রল ফ্রিগেট ২ টি(হ্যামিল্টন ক্লাস)।

দুই মাসের মাঝেই আরও ২ টি Type53H3 যুক্ত হলে ফ্রিগেটের সংখ্যা দাড়াচ্ছে ৮ টিতে।

বার্মিজ নেভীতে এধরনের ৫ টি যুদ্ধজাহাজ আছে।তবে সেগুলো বাংলাদেশের মত আধুনিক ও শক্তিশালী না।

BNS Bangabandhu

বিএনএস বঙ্গবন্ধু বা উলসান ক্লাস ফ্রিগেট

Hamilton-Class Frigate

বিএনএস সমুদ্র অভিযান বা হ্যামিল্টন ক্লাস ফ্রিগেট

BNS Osman

বিএনএস ওসমান বা টাইপ-৫৩এইচ১ ফ্রিগেট

BNS Abu Bakar

বিএনএস আবু বকর বা টাইপ-৫৩এইচ২ ফ্রিগেট


করভেটঃ

২০০৯ সালে বাংলাদেশ নেভীতে করভেট শ্রেনীর কোন যুদ্ধজাহাজ ছিল না। বর্তমানে নেভীতে এরকম যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা ৬ টি(২ টি ক্যাসল ক্লাস, ৪ টি স্বাধীনতা ক্লাস), খুলনা শিপইয়ার্ডে স্বাধীনতা ক্লাসের আরো ৪ টি উন্নত ভার্সন বানানোর প্রক্রিয়া চলমান। বার্মিজদের কাছে এধরনের ৩ টি জাহাজ আছে যেগুলো আকারে তুলনামূলক ছোট ও দুর্বল।

Shadhinota Class Corvette

স্বাধীনতা ক্লাস বা টাইপ-৫৬ করভেট

Castle Class Corvette

বিএনএস ধলেশ্বরী বা ক্যাসেল ক্লাস করভেট


সাবমেরিনঃ

২০০৯ সালে বাংলাদেশ নেভীতে কোন সাবমেরিন না থাকলেও বর্তমানে ২ টি এটাক সাবমেরিন আছে যেগুলো সর্বোচ্চ ৩৮ কি.মি. দূরে টর্পেডো হামলা চালাতে পারে। ২০২৩ সালের মাঝে আরও ৩ টি তুলনামূলক আধুনিক সাবমেরিন নেভীতে যুক্ত হবে। বার্মিজ নেভীতে আপাতত কোন সাবমেরিন নেই। তবে ভারত তাদেরকে একটি সাবমেরিন ফ্রিতে দিচ্ছে। সম্ভবত ২০২০ সালে বার্মিজ নেভীতে যুক্ত হবে। এটা বাংলাদেশের সাবমেরিনের চেয়ে একটু উন্নত, তবে বার্মিজদের কাছে সর্বোচ্চ ৭ কি.মি. রেঞ্জের টর্পেডো আছে।

Ming Class Submarine

বিএনএস নবযাত্রা ও জয়যাত্রা বা মিং ক্লাস সাবমেরিন


লার্জ পেট্রল ক্রাফটঃ

২০০৯ সালে এধরনের মাত্র ১ টি যুদ্ধজাহাজ থাকলেও বর্তমানে এরকম ৫ টি যুদ্ধজাহাজ সার্ভিসে আছে। নতুন ৪ টা জাহাজের মাঝে ২ টি বাংলাদেশেই তৈরি। আরও ৩ টি জাহাজ তৈরির কাজ শেষপর্যায়ে। বার্মিজ নেভীতে এরকম ৩ টি জাহাজ আছে।

মূলত এগুলোই একটি নৌবাহিনীর মূল শক্তি।এগুলো ছাড়াও মাইন সুইপার, গানবোট, মিসাইল বোট ইত্যাদি ছোট ছোট বোট আছে। তবে এগুলো শুধু উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যবহারযোগ্য বলে হিসেবে ধরা হয়নি। এগুলো আত্মরক্ষার জন্য, আক্রমনের জন্য নয়।

BNS Nirmul

বিএনএস নির্মুল বা দুর্জয় ক্লাস

বাংলাদেশ নেভী নিয়ে বিস্তারিত পড়তে পারেন এখানে।

Facebook Comments

comments