হয়তো অনেকেই শুনেছেন বাংলাদেশের So Called Friend বা সর্বশ্রেষ্ঠ গুটিবাজ বন্ধু পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত তাদের বহরের একটি কিলোক্লাস সাবমেরিন মিয়ানমার কে উপহার দিয়েছে। আর এই সাবমেরিনটির নাম হচ্ছে আইএনএস সিন্ধুবীর।

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত ডিজেল ইলেকট্রিক সাবমেরিন হচ্ছে রুশ কিলো ক্লাস সাবমেরিন৷ যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সাবমেরিন বহরের পুরোটাই পরমানু শক্তিচালিত সেখানে রাশিয়া পরমানু শক্তিচালিত ও ডিজেল ইলেকট্রিক দুই ধরনের সাবমেরিনই ব্যবহার করে৷ প্রায় ৪০ বছর পুরানো সাবমেরিন হলেও এটি বর্তমানে বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীতে স্থান করে নিয়েছে৷ রাশিয়া, চীন, ভারত, ইরান এবং ভিয়েতনাম সহ আরো কয়েকটি দেশ এই সাবমেরিনটি ব্যবহার করে।

ছবিতে আইএনএস সিন্ধুবীর

কিলো ক্লাস সাবমেরিনটি তৈরি করা হয় ১৯৮০ সালে প্রজেক্ট ৮৭৭ নামে৷ এর রাশিয়ান নাম হলো Paltus৷ পরে প্রজেক্ট ৬৩৬ নামে এমন আরেকটি সাবমেরিন তৈরি করা হয় যা মূলত মডিফাইড কিলো ক্লাস৷ নতুন সাবমেরিনে বিশেষত্ব হচ্ছে এর পুরো শরীরে রাবারের আবরন দেওয়া যার ফলে সোনার থেকে তৈরি শব্দ এটি শুষে নেয়৷ তাই একে ডিটেক্ট করা তুলনামূলক কঠিন৷

ছবিতে রাশিয়ান কিলোক্লাস সাবমেরিন

কিলো ক্লাসকে তৈরি করা হয়েছে অগভীর পানির তলদেশের উপর দিয়েও যাতে সহজে চলতে পারে। এছাড়া এতে রয়েছে AIP সিস্টেম যা ডিজেল ইলেকট্রিক সাবমেরিনকে পানির নিচে বেশিদিন ডুবে থাকতে সহায়তা করে যেখানে অন্যান্য সাবমেরিনকে ব্যাটারি রিচার্জ করার জন্য উপরে উঠে আসতে হয়। উল্লেখ্য আমাদের মিং ক্লাস সাবমেরিনে AIP সিস্টেম নেই ৷

মডিফাইড কিলো ক্লাসে রয়েছে পুরোনো ভার্সনের তুলনায় শক্তিশালী সোনার ও নতুন কম্ব্যাট ডাটা সিস্টেম যা একে পানির নিচে একসাথে ৫টি টির্গেট ডিটেক্ট করার সুবিধা দেয়। কিলো ক্লাসের সার্ফেস অবস্থায় ওজন প্রায় ২৩০০ টন ও ডুবন্ত অবস্থায় ৩৯০০ টন। এটি পানির সর্বোচ্চ ৩০০ মিটার নিচে ডাইভ দিতে পারে।

ইম্প্রুভড কিলোক্লাস সাবমেরিন

সাবমেরিনটি সাইলেন্ট হওয়ার রাশিয়ানরা একে ব্ল্যাক হোল নামেও ডেকে থাকে৷ এর অস্ত্রভান্ডারে আছে ৫৩৩ মিলিমিটারের ১৮ টা টর্পেডো যার ৬ টি একেবারে ছোড়া সক্ষম অথবা ভিএ-১১১ এন্টি সাবমেরিন মিসাইল অথবা ২৪ টি মাইন। এন্টিশিপ ও সার্ফেস ওয়ারফেয়ার এর জন্য আছে ক্যালিবার-পিএল ল্যান্ড এটাক/এন্টিশিপ/এন্টি সাবমেরিন মিসাইল যা একই সাথে জাহাজ ও স্থলে থাকা টার্গেট দুটিতেই হিট করতে সক্ষম । এয়ার ডিফেন্স হিসেবে আছে ৮ টি স্ট্রেলা-৩/ইগলা এন্টি এয়ারক্রাফট মিসাইল যদিও তা এক্সপোর্ট ভার্সনে নেই।

ছবিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মিং ক্লাস সাবমেরিন

যদি আমাদের মিং ক্লাসের সাথে তুলনা করতে যাই তবে বলবো Kilo class is a whole other level so do not take it lightly। যদি কেউ আপনাকে আশ্বাস দেয় যে পুরানো ভাঙারী কিলো ক্লাস কি করবে তখন বুঝতে হবে সে জানে না আর না হয় সে আপনাকে মিথ্যা বলছে। এই কিলো ক্লাস সাবমেরিনটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য বেশ সমস্যার কারন হতে পারে যদি আমরা এর জন্য পর্যাপ্ত পরিমানে প্রস্তুত না থাকি ।

Facebook Comments

comments