চীন থেকে দুটি মিং ক্লাস সাবমেরিন কেনা নিয়ে ভারত বরাবরই বিরোধীতা করে আসছিলো। কেননা বাংলাদেশের সাবমেরিনকে ইস্যু করে এই অঞ্চলে চীনাদের আনাগোনা বাড়বে। যা ভারতীয় নৌবাহিনী কিংবা ভারত মোটেও ভালো চোখে দেখছেনা।

যাই হোক নৌবাহিনীর বহরে সাবমেরিন যুক্ত হওয়ায় বাংলাদেশ নেভী ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে, যা এই অঞ্চলে আমাদের নেভীকে নিয়ে গেছে অন্যতম উচ্চতায়।

বর্তমানে আমাদের বহরে দুটো সাবমেরিন যুক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশ নৌবাহিনী মিয়ানমারের তুলনায় বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে আছে। তবে ভারত খুব সম্ভবত ২০১৯ এর শেষের দিকে আইএনএস সিন্ধুবীর নামে তাদের এই কিলোক্লাস সাবমেরিনটি মিয়ানমারকে হস্তান্তর করতে যাচ্ছে।

ছবিতে আইএনএস সিন্ধুবীর

আর তাই বার্মার বহরে এই কিলোক্লাস সাবমেরিন যুক্ত হবার ফলে বলতে গেলে সাবমেরিনের রেসে তখন তারাই এগিয়ে থাকবে। কারন আর যাই হোক, কিলোক্লাস সাবমেরিনের সাথে অবশ্যই মিং ক্লাসের তুলনা চলেনা। আর আমাদের দুটো সাবমেরিন সহজেই কিলোক্লাসের মোকাবেলা করতে পারবেনা এছাড়াও আপাতত ২০২০/২২ এর আগে আমাদের বহরে নতুন কোন সাবমেরিন যুক্ত হবার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

ছবিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মিং ক্লাস সাবমেরিন

কিলোক্লাস আসলেই অন্য লেভেলের গেমচেঞ্জার সাবমেরিন।

প্রথমত আমাদের মিং গুলা টর্পেডো ছাড়া আর কোন অস্ত্র বহন করেনা, যেখানে কিলোক্লাস টর্পেডোর পাশাপাশি এন্টিশীপ/এন্টি সাব মিসাইল ও বহন করে।

এবার আসি অস্ত্রশস্ত্রের তুলনায়ঃ

আমাদের টাইপ ০৩৫জি বা মিং ক্লাস সাবমেরিনে রয়েছে শুধুমাত্র,
১) ৫৩৩ মি.মি. এর ৮ টি টর্পেডো টিউব।

যেখানে কিলোক্লাস সাবমেরিনে রয়েছে,
১) ৫৩৩ মি.মি. এর ৬ টি টর্পেডো টিউব
২) ২৪ টি মাইন
৩) স্টেলা-৩(Strela-3) সার্ফেস টু এয়ার মিসাইল
৪) এছাড়া কিলোক্লাসে আছে 3M-54 Calibr (এক্সপোর্ট ভার্সনের নাম Klub) নামের ভয়ংকর বিধ্বংসী মিসাইল।

ছবিতে ক্লাব মিসাইল

আর এই মিসাইলটির ৫ টি ভার্সন রয়েছে। যার মধ্যে
১) দুই ধরনের এন্টিশীপ মিসাইল
২) দুই ধরনের এন্টি সাবমেরিন মিসাইল ও
৩) ল্যান্ড এটাক ক্রুজ মিসাইল রয়েছে।

যাই হোক বার্মার এই অস্ত্রগুলো পাবার চান্স নেই। তবে তারা ভারত থেকে বরুনাস্ত্র টর্পেডো পাবে আর একটু দেরী হলেও ওরা ঠিকই সাবমেরিনের জন্য মিসাইল ম্যানেজ করে নিবে। যেটা মোটেও আমাদের জন্য ভালো খবর নয়।

ছবিতে রাশিয়ার কিলোক্লাস সাবমেরিন

যাই হোক কিলো-ক্লাস সাবমেরিন নিয়ে অনেক বলেছি। বিভিন্ন সূত্রমতে রাশিয়ার বহরে ৫১ টির মত কিলোক্লাস ও ইম্প্রুভড কিলোক্লাস সাবমেরিন সার্ভিসে আছে। ভারতের বহরে আছে ৯/১০ টি।

তবে রাশিয়া, ভারত ছাড়াও চীন, ইরান, ভিয়েতনাম,  পোল্যান্ড, আলজেরিয়া ও রোমানিয়া সহ কিছু দেশ এই কিলোক্লাস সাবমেরিনটি ব্যবহার করে।

Facebook Comments

comments